ওযরগ্রস্ত বা অসুস্থ ব্যক্তি ও মুসাফিরের নামাজ

13008

 

যাদের কোনো ওযর রয়েছে

অসুস্থতা, সফর ও ভয়

অসুস্থ ব্যক্তির নামাজ

অসুস্থ ব্যক্তি তার সাধ্য মতো নামাজ পড়বে। অতএব সে যদি সুস্থ ব্যক্তির মতোই সবকিছু করতে পারে, তবে সেভাবেই করবে। আর যদি না পারে তবে সাধ্য অনুযায়ী যেভাবে পারে সেভাবে পড়বে|

অসুস্থ ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারে তবে দাঁড়িয়েই পড়বে। আর যদি দাঁড়িয়ে পড়তে না পারে, তা হলে বসে বসে পড়বে। আর যদি বসেও পড়তে না পারে তাহলে কাত হয়ে শুয়ে চেহারা কিবলার দিকে করে নামাজ পড়বে। যদি কাত হয়ে শুয়ে সম্ভব না হয়, তা হলে, সম্ভব হলে, চিৎ হয়ে শুয়ে কিবলার দিকে পা দিয়ে নামাজ পড়বে, এটাও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেভাবে সম্ভব সেভাবেই পড়বে।

এ সবের দলিল হলো আল্লাহ তাআলার বাণী,«অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় করো।»

হাদীসে এসেছে ইমরান ইবনে হুসাইনকে লক্ষ্য করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,«তুমি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পার তাহলে বসে, যদি না পার তাহলে শুয়ে।»(র্বণনায় বুখারী)

অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের আহকাম

১. যদি অসুস্থ ব্যক্তি বসে নামাজ পড়ে এবং সিজদা দিতে সক্ষম হয় তবে সিজদা দেয়া তার জন্য ওয়াজিব হবে।

২. যদি বসে নামাজ পড়ে এবং সিজদা দিতে অক্ষম হয় তাহলে শরীর দিয়ে রুকু ও সিজদার জন্য ইশারা দেবে। সিজদা রুকুর চেয়ে একটু নিচু হবে। শরীর দিয়ে ইশারা করা সম্ভব না হলে মাথা দিয়ে ইশারা করবে। অনুরূপভাবে যখন চিৎ হয়ে শুয়ে নামাজ পড়বে তখনও মাথা দিয়ে ইশারা দিবে।

৩. যদি প্রতি নামাজের জন্য অসুস্থ ব্যক্তির অজু করা সম্ভব না হয় অথবা প্রতি ওয়াক্তে নামাজ পড়া কষ্টকর হয়, তাহলে যোহর ও আসর, মাগরিব ও ইশা একসাথে জমা করে পড়বে। অসুস্থ ব্যক্তির সুবিধামতো প্রথমটার সময় অথবা শেষটার সময় একত্র করে পড়তে পারবে।

৪. যতক্ষণ পর্যন্ত হুঁশ-জ্ঞান ঠিক থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত নামাজ মাফ হবে না। অতএব অসুস্থ ব্যক্তির অসুস্থতার অজুহাতে এ ব্যাপারে অবহেলা করা কখনো উচিত হবে না। বরং নামাজ আদায়ের ব্যাপারে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যেতে হবে।

৫. যদি অসুস্থ ব্যক্তি কিছু দিন চেতনাহীন হয়ে পড়ে থাকে। আবার কিছু দিনের জন্য চৈতন্য ফিরে পায়, তাহলে চেতনাবস্থায় সে সাধ্যমতো নামাজ আদায় করবে। আর অচেতন অবস্থার নামাজগুলো তার কাযা করতে হবে না যদি অচেতন অবস্থা বেশি দীর্ঘায়িত না হয়, যেমন মাত্র একদিন অচেতন হয়ে রইল, এমতাবস্থায় যখন সম্ভব ওই দিনের নামাজ কাযা করে নেবে।

মুসাফিরের নামাজ

চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজ, যেমন যোহর আসর ও ইশা কসর করে দু রাকাত পড়া মুসাফিরের জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন, {আর যখন তোমরা জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোন দোষ নেই। যদি আশঙ্কা কর যে, কাফিররা তোমাদেরকে ফিতনায় ফেলবে। নিশ্চয় কাফিররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু} [সূরা নিসা:১০১]

হাদীসে এসেছে, আনাস ইবনে মালিক রযি. বলেন, «আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে মদীনা থেকে মক্কার উদ্দেশে বের হয়েছি। তিনি মদীনায় ফিরে আসা পর্যন্ত আমাদেরকে নিয়ে (চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজ) দু রাকাত করে আদায় করেছেন।» [বর্ণনায় নাসায়ী]

সফর বলতে যা বুঝায়

যে সফরে কসর করে নামাজ পড়া ওয়াজিব এবং রমজানে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তার সর্বনিম্ন দূরত্ব হলো পায়ে হেঁটে অথবা উটে চড়ে মধ্যম গতিতে চলার তিনদিনের পথ। অবশ্য আলেমদের কারও কারও নিকট প্রথাগতভাবে যাকে সফর বলা হয় সেটাই হলো নামাজ কসর করা বৈধ হওয়ার সফর।

নামাজ কসর করা

১. মুসাফির যে এলাকায় বসবাস করে সে এলাকার বাড়ীঘর অতিক্রম করার পর থেকে কসর শুরু হবে। দারুল ইকামত অর্থাৎ আবাস এলাকায় থাকাবস্থায় কসর করা জায়েয নয়; কেননা নিজ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কসর করেছেন বলে কোনো বর্ণনায় আসেনি।

২. মুসাফির যখন কোনো এলাকায় পৌঁছবে এবং ১৫ দিন অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেবে তখন সে মুকীম হয়ে যাবে এবং তার জন্য পূর্ণাঙ্গরূপে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব হবে। আর যদি ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তার জন্য কসর করা ওয়াজিব হবে। আর যদি, কতদিন থাকবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত না নেয়, বরং যে কজের উদ্দেশে সফর করেছে তা শেষ হলেই নিজ এলাকায় ফিরে যাবে বলে মনস্থির করে, তাহলে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত কসর করে নামাজ আদায় করে যাবে। এ অবস্থায় যদি পনের দিনের অধিক অবস্থান করে তবুও কোনো সমস্যা হবে না।

৩. মুসাফির যদি মুকীম ব্যক্তির পেছনে নামাজ আদায় করে তাহলে কসর ব্যতীত পূর্ণাঙ্গ নামাজই আদায় করতে হবে। ইমামের সাথে পুরো নামাজ না পেলেও ইমামের সালামের পর বাকি নামাজ পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হবে।

দুই নামাজ একত্রে জমা করে পড়া

মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তি কি যোহর ও আসর যেকোনো একটির সময়ে এবং মাগরিব ও এশা যেকোনো একটির সময়ে আদায় করতে পারবে? আলেমগণ এ মাসআলার ক্ষেত্রে মতানৈক্য করেছেন। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তি জমা করতে পারবে না তবে কেবল রূপক অর্থে। যেমন প্রথম নামাজটি একেবারে শেষ ওয়াক্তে পড়বে এবং দ্বিতীয় নামাজটি প্রথম ওয়াক্তে। তাদের প্রমাণ আল্লাহ তাআলার বাণী,

{নিশ্চয় নামাজ মুমিনদের ওপর সুনির্দিষ্ট সময়ে ফরজ}[সূরা আন-নিসা:১০৩]

জমহুর ফকীহদের মতানুযায়ী, «দুই নামাজ একত্রে জমা করে পড়া বৈধ। তাদের প্রমাণ বেশ কয়টি হাদীস, যেমন মুয়ায (রাযি.)-র হাদীস আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে তাবুক যুদ্ধে বের হলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যোহর ও আসর» মাগরিব ও এশা একসাথে আদায় করতেন। [বর্ণনায় মুসলিম]

আর অসুস্থ ব্যক্তির জন্য তাঁরা উক্ত পদ্ধতিতে নামাজ জমা করে পড়া সফরের সাথে তুলনা করে বলেছেন, যেহেতু উভয়টিতে কষ্ট রয়েছে। যদি প্রথমটির সময়ে

দুই নামাজ একত্রে পড়া হয় তবে এটাকে জম-এ তাকদীম বলে। আর যদি দ্বিতীয়টির সময় একত্র করা হয় তবে এটাকে জম-এ তাখীর বলে।

৩-জমা ও কসর সবসময় একই সাথে হওয়া জরুরি নয়, কখনো হয়তো জমা ও কসর উভয়টিই করা হবে। আবার কখনো হয়তো শুধু জমা করা হবে কসর করা হবে না।

বাসে আরোহিত মুসাফিরের নামাজ

১. নফল নামাজ: বাসে নফল নামাজ পড়া বৈধ। এর জন্য কোনো ওযর থাকার প্রয়োজন নেই। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বাহনের ওপর নফল নামাজ আদায় করতেন, যে দিকে তা যেত সেদিকেই পড়তেন।

২. ফরয নামাজ: বাসে ফরয নামাজ পড়া জায়েয আছে যদি বাস থেকে নেমে নামাজ আদায় করার সুযোগ না থাকে। অথবা যদি বাস থেকে নেমে নামাজ আদায়ের সুযোগ থাকে কিন্তু দ্বিতীয়বার বাসে না উঠতে পারার আশঙ্কা থাকে। অথবা যদি বাস থেকে নামলে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বাহনের উপর ফরয নামাজ পড়ার কয়েকটি সুরত হতে পারে:

ক- নামাজী হয়তো কিবলামুখী হতে পারবে, এবং রুকু-সিজদা করতে পারবে, যেমন পানির জাহাজে থাকাবস্থায়। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই নামাজ আদায় করবে; কেননা এ অবস্থায় সে সক্ষম।

খ - নামাজী তার বাহনে কিবলামুখী হতে পারে তবে রুকু সিজদা করতে পারে না, এমতাবস্থায় তাকবীরে তাহরিমার সময় কিবলামুখী হবে, এরপর বাহন যে দিকে যায় সে দিকে ফিরেই নামাজ পড়বে এবং রুকু ও সিজদার সময় ইশারা দেবে।

সালাতুল খাওফ

শরীয়তসম্মত প্রত্যেক যুদ্ধক্ষেত্রে সালাতুল খাওফ আদায় করা জায়েয। এ ক্ষেত্রে মুকীম ও মুসাফিরের মধ্যে কেনো পার্থক্য নেই। কুরআন ও সুন্নাহ থেকে এর প্রমাণ হলো:

আল কুরআনে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন:

(وَإِذَا كُنتَ فِيهِمۡ فَأَقَمۡتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلۡتَقُمۡ طَآئِفَةٞ مِّنۡهُم مَّعَكَ وَلۡيَأۡخُذُوٓاْ أَسۡلِحَتَهُمۡۖ فَإِذَا سَجَدُواْ فَلۡيَكُونُواْ مِن وَرَآئِكُمۡ وَلۡتَأۡتِ طَآئِفَةٌ أُخۡرَىٰ لَمۡ يُصَلُّواْ فَلۡيُصَلُّواْ مَعَكَ وَلۡيَأۡخُذُواْ حِذۡرَهُمۡ وَأَسۡلِحَتَهُم )

{আর যখন তুমি তাদের মধ্যে থাকবে। অতঃপর তাদের জন্য সালাত কায়েম করবে, তখন যেন তাদের মধ্য থেকে একদল তোমার সাথে দাঁড়ায় এবং তারা তাদের অস্ত্র ধারণ করে। এরপর যখন সিজদা করে ফেলবে, তখন তারা যেন তোমাদের পেছনে অবস্থান নেয়। আর অপর একটি দল যারা সালাত আদায় করেনি তারা যেন তোমার সাথে এসে সালাত আদায় করে এবং তারা যেন তাদের সতর্কতা অবলম্বন ও অস্ত্র ধারণ করে|}
[সূরা আন-নিসা:১০২]

বৃষ্টির কারণে দুই নামাজ একসাথে জমা করা

বৃষ্টির কারণে দুই নামাজ একসাথে জমা করা হানাফী মাযহাব অনুযায়ী জায়েয নেই। অবশ্য আলেমদের কেউ কেউ তা জায়েয বলেছেন। আর যারা ঘরে নামাজ আদায় করবে, যেমন নারীদের ক্ষেত্রে, তাদের জন্য কারও কাছেই দুই নামাজ একত্রে পড়া বৈধ নয়।

হাদীসের প্রমাণ হলো এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের আমল।

সালাতুল খাওফ আদায় পদ্ধতি

খাওফ বা ভয়ের কারণে নামাজের রাকাত সংখ্যা কমে যাবে না। অতএব যদি মুকীম ব্যক্তি সালাতুল খাওফ আদায় করে তবে পরিপূর্ণরূপেই আদায় করতে হবে। আর যদি মুসাফির ব্যক্তি তা আদায় করে তাহলে কসর করে আদায় করতে হবে। তবে সালাতুল খাওফ আদায়ের ধরন-ধারণে বিভিন্নতা রয়েছে যার সবগুলোই জায়েয।

যে ধরনের ভয়ের কারণে সালাতুল খাওফ আদায় করা বৈধ তার দুটি অবস্থা রয়েছে:

প্রথম অবস্থা: শত্রুর আক্রমণের ভয়

এ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত যেকোনো পদ্ধতিতে তা আদায় করা যাবে, যার মধ্যে সবথেকে প্রসিদ্ধ হলো সাহল ইবনে আবি খাসআমার বর্ণিত পদ্ধতি। আর তা হলো এই: ইমাম মুক্তাদীদেরকে দু দলে বিভক্ত করবে। একদল শত্রুদের প্রতি নজর রাখবে। অন্যদল ইমামের সাথে এক রাকাত আদায় করবে। ইমাম যখন দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে তখন ইমামের ইকতিদা ছেড়ে দেবে এবং অবশিষ্ট নামাজ নিজেরা আদায় করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে দেবে। এরপর তারা শত্রুর প্রতি নজরদারির জন্য চলে যাবে। এবার দ্বিতীয় দলটি আসবে এবং ইমামের সাথে দ্বিতীয় রাকাত আদায় করবে। ইমাম যখন তাশাহ্হুদ পড়তে বসবে তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে এবং নিজেদের অবশিষ্ট নামাজ আদায় করে নেবে। এ অবস্থায় ইমাম তাদের অপেক্ষায় থাকবে। অতঃপর তারা যখন বসবে এবং তাশাহ্হুদ পড়ে নেবে তখন ইমাম তাদেরকে নিয়ে একসাথে সালাম ফেরাবে।

এটা হলো মুকীম অবস্থায় ফজর এবং সফর অবস্থায় সালাতুল খাওফের পদ্ধতি। কিন্তু যদি মুকীম অবস্থা হয় অথবা মাগরিবের নামাজ আদায় করা হয়, «তাহলে প্রথম দলকে নিয়ে ইমাম দু রাকাত নামাজ আদায় করবে। এরপর তারা ইমামের ইকতিদা ছেড়ে দিয়ে বাকি নামাজ নিজেরা আদায় করে নেবে। এরা চলে গেলে দ্বিতীয় দলটি আসবে ও অবশিষ্ট নামাজে ইমামের ইকতিদা করবে। ইমাম যখন শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়তে বসবে তখন তারা ইমামকে ছেড়ে দিয়ে বাকি নামাজ পূর্ণ করে নেবে। আর ইমাম তাদের অপেক্ষায় থাকবে। তারা যখন শেষ বৈঠকে বসবে এবং তাশাহ্হুদ পড়ে নেবে» ইমাম তখন তাদেরকে নিয়ে সালাম ফেরাবে।(বর্ণনায় বুখারী)

দ্বিতীয় অবস্থা হলো: এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া যে উল্লিখিত পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এ রূপ পরিস্থিতিতে হাঁটা অবস্থায় বা আরোহনরত অবস্থায় নামাজ আদায় করা শুদ্ধ। সম্ভব হলে কিবলামুখী হবে। আর সম্ভব না হলে কিবলামুখী না হলেও চলবে। ইবনে উমর রাযি. বলেছেন,«যদি ভয় এর থেকেও বেড়ে যেত, তারা তখন দাঁড়িয়ে হাঁটা অবস্থায় অথবা আরোহনরত অবস্থায় কিবলামুখী হয়ে বা না হয়ে নামাজ আদায় করতেন।»(বর্ণনায় বুখারী )এ অবস্থায় ইশারা দিয়ে রুকু ও সিজদা করবে। অতএব হাঁটা অবস্থায়, অথবা যুদ্ধবিমানে আরোহিত অবস্থায় অথবা ট্যাংকের উপরে যে হালতে আছে সে হালতেই নামাজ পড়বে। এর প্রমাণ আল্লাহ তাআলার বাণী:

(َإِنۡ خِفۡتُمۡ فَرِجَالًا أَوۡ رُكۡبَانٗاۖ )

{কিন্তু যদি তোমরা ভয় কর, তবে হেঁটে কিংবা আরোহণ করে (আদায় করে নাও)।}
[সূরা আল বাকারা:২৩৯]

শরীয়তের সহজতা

ইসলামি শরীয়তের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো সহজতা, সাবলীলতা ও সঙ্কটপূর্ণ অবস্থার অপসারণ। কষ্টদুর্ভোগ সহজতা নিয়ে আসে, ইসলামী শরীয়তের এটি একটি সাধারণ ব্যাকরণ।